ছাপ্পান্ন ইঞ্চি ভয়। নাঃ কাউকে প্যাঁক দিচ্ছিনা। ভয়ের গভীরতা মাপছি। কেউ কেউ আরশোলা দেখে ভয় পায়। তার চেয়ে সাহসী যারা তারা আবার ইঁদুর দেখে ভয় পায়। আচ্ছা খাসা সাহসী লোক গোরু দেখে ভয় পায়। অনেকে অন্ধকার দেখে ভয় পায়। বিড়াল আচমকা শসা দেখে ভয় পায়। যাদের ভীমরতি ধরেছে তারা আবার দড়ি দেখে সাপ ভেবে ভয় পায়।

টূলকিট একটা ভয় মাপার যন্ত্র। পুরোপুরি ডিজিটাল। রাষ্ট্রের বগলে টুলকিট ঢুকিয়ে দেখলাম রাষ্ট্র ছাপ্পান্ন ইঞ্চি ভয় পেয়েছে। তারপর রাষ্ট্রবাবু দিশা রবি নামের একটি পরিবেশকর্মীর ওপর রাষ্ট্রদ্রোহের কেস ঠুকে দিয়েছে। রজ্জুতে সর্পভ্রম হয় সেটা তো বললাম। রাষ্ট্র কিন্তু তার বাকযন্ত্র মানে মিডিয়া দিয়ে সেই দড়িটাই যে সাপ সেটা প্রমাণ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এটাকে বলে এজেন্ডা ভাজা।

মানুষকে ভুল বোঝানো সহজ নয়। কিন্ত আজকাল আর মানুষ কোথায়! মানুষ তো জ্ঞান হারিয়েছে। সবাই তো পাবলিক হয়ে গেছে। পাবলিকের সামনে যদি একসঙ্গে খানকুড়ি মিডিয়া দড়িকেই সাপ বলে তবে ওই দড়িটাই নির্ঘাৎ সাপ। মিডিয়া কি আর পাবলিককে ভুল বোঝাবে? দেশদ্রোহীকে চিহ্নিত করার কাজ তো মিডিয়ার! এখন গাদাগুচ্ছের পাবলিক মানুষকে দেশদ্রোহী ভাবছে।

দেশদ্রোহিতা আজকাল জলভাতের মতো ব্যাপার। মাঠের মধ্যে শাবল দিয়ে গর্ত খুঁড়লেও আপনি দেশদ্রোহী হয়ে যেতে পারেন। আপনার কপাল মন্দ থাকলে মিডিয়া ওই গর্তের মধ্যে দিয়ে একটা সুরঙ্গ খুঁজে পাবে। এইবার মিডিয়ার জনাকয়েক পেয়াদা মাইক বগলে সেই সুরঙ্গে সুরুৎ করে ঢুকে পড়বে। তারপর তারা সেই সুরঙ্গ থেকে প্রধানমন্ত্রীর বাড়ির ফুলের বাগান দেখতে পাবে। সুরঙ্গের মধ্যে আরও তিনটে রাস্তা থাকার কথা এরা বলবে। একটা পাকিস্তান পর্যন্ত চলে গেছে। আরেকটা চীন পর্যন্ত যাচ্ছে। এখন আবার খালিস্তানের রাস্তা দেখা যাচ্ছে। ওটা কানাডায় গিয়ে উঠছে। সুরঙ্গে ঢুকে মিডিয়ার পেয়াদাগুলো তারস্বরে চেঁচাবে। ষড়যন্ত্র প্রমাণ করতে রাষ্ট্রের স্বরযন্ত্র আপনার কান ঝালাপালা করে দেবে। টিভি বন্ধ না করা পর্যন্ত রেহাই নেই।

পাবলিক তো ঢুকতে পারছেনা। সুরঙ্গ থেকে শুধু মিডিয়ার আওয়াজ শুনেই পাবলিক ভয় ঠকঠক করে কাঁপতে শুরু করে দেবে। কেউ কেউ আবার লাঠি নিয়ে তাড়া করবে। কাউকে কখনো চোরাগোপ্তা আক্রমণে মেরেও ফেলা হবে। এসব আকছার হচ্ছে। তাই সাবধান। খবরদার কোথাও গর্ত খুঁড়বেন না বলে দিচ্ছি। ভয়ের গভীরতা এখন ছাপ্পান্ন ইঞ্চি। টুলকিট দিয়ে মেপে এসেছি।