আজ (১৯ মার্চ, ২০১৯) দুপুর একটা নাগাদ ‘মাই নেশন’ বলে একটা নিউজ পোর্টালে একটা খবর প্রকাশ পায়। তাতে বলা হয়েছে তৃণমূলের বিধায়ক অভিষেক ব্যানার্জির স্ত্রী ব্যাঙ্কক থেকে থাই এয়ারওয়েজ-এ কলকাতায় দু কিলো সোনা সমেত বিমানবন্দরের কাস্টমস পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যান। বিধায়কের স্ত্রী তৎক্ষণাত অভিষেককে ডাকেন। অভিষেক চলে আসেন বিমানবন্দরে। তারপর কলকাতা পুলিশের বড়কর্তারাও আসেন। এবং বন্দর পুলিশের সঙ্গে কোলকাতা পুলিশের বচসা হয়। পরে ‘বোঝাপড়া’ হয়। এবং ঘটনাটা চাপা পড়ে যায়। [সূত্রঃ মাই নেশন]
ঘটনাটা সত্যি কি মিথ্যে তার প্রমাণ পাওয়া এই মুহূর্তে দুরূহ। বিজেপির কয়েকজন চৌকিদার এই ঘটনাটা টুইট করেন। চৌকিদার বাবুল সুপ্রিয়, লকেট চ্যাটার্জি ও স্বপন দাসগুপ্ত এই খবরটা টুইট করতে থাকেন। সন্মার্গ নামক একটি হিন্দি দৈনিকেও এই খবরটা আজ দেখা গেছে। তবে খবরে অভিষেক ও তাঁর স্ত্রীর নাম দেওয়া হয়নি। এছাড়া অন্য কোন খবরের পোর্টাল ও দৈনিক এই খবরটা প্রকাশ করেছে কিনা আমার জানা নেই।
তারপর কিছুক্ষণ আগে ‘এখন খবর’ নামের একটি অখ্যাত নিউজ পোর্টাল-এ এই খবরটাকে ভুয়ো বলে দাবি করা হয় ও বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দাগা হয়।
এইসব দেখে আমার বাংলার বিখ্যাত মিডিয়াগুলোর ওপর আরও সন্দেহ বাড়ল। বাংলার মিডিয়া বোম্বের নায়কের ছেলে তৈমূরের ‘আয়ামাসি’র মাইনে কত তা নিয়ে এক সপ্তাহ আগে খবর করেছে। আম্বানির ছেলের বিয়েতে আরেক নায়িকা ঐশ্বর্য্য রাই-এর মেয়ে কেন রেগে গেল তা নিয়ে খবর করেছে। এবং দীর্ঘদিন ধরেই তৈমূরের জীবনচর্চার গল্পে আমাদের মশগুল রেখেছে। আরও নানাধরণের মুখরোচক ও কুরুচিকর খবর তারা রোজ তৈরি করে বাজারে ছাড়ছে। আজকাল কে কি খেয়ে ভোট প্রচারে যাচ্ছে তারও গল্প পড়ছি। কিন্তু কোলকাতার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এই সোনা পাচারের গল্পটার কোন খবর নেই। হতে পারে এই ধরণের কিছুই হয়নি। সেটাও তো মিডিয়ার জানানো কর্তব্য। আর যদি হয়ে থাকে তাহলে কোথায় গেল দু’কেজি সোনা? কে সেই মহিলা? এইসব তথ্যগুলো প্রকাশ করার দায়িত্ব কার? 
অবশ্য অনেক খবরই মিডিয়াতে থাকার যোগ্যতা পায়না। যেমন এসএসসি চাকুরিপ্রার্থীদের অনশন। যেমন অনশনরত মেধাবী হবু শিক্ষিকার গর্ভপাতের ঘটনা। যেমন যোগ্য চাকুরিপ্রার্থীদের চাকরির দাবিতে খোলা আকাশের নিচে রোদ, জল, ঝড় ও বৃষ্টির মধ্যে বসে থাকা। যেমন দাবি আদায়ের জন্যে কৃষক ও শ্রমিকদের ঘাম ও রক্তমাখা সংগ্রাম। মিডিয়া অবশ্যই তার যোগ্যতা হারিয়েছে। জানিনা কজনের কাছে আমার এই বার্তা পৌঁছোতে পারল। যদি পৌঁছোল তবে আপনিও মিডিয়ার প্রতি একরাশ ঘৃণা ছূঁড়ে মেরে বলুন মিডিয়া আর আয়না নেই, মিডিয়া এখন বাজনা। তাই আবার বলি এই মিডিয়া আর না, আর না।