যে রাজ্যে মেজদার বোনের মতো বীরাঙ্গনা রয়েছেন সে রাজ্যের উনুনে রাবড়ি তৈরি করতে দুদিক থেকে হাওয়া দেওয়ার প্রয়োজন হয়না। মেজদার বোনের মতো আমার এত্তবড় একটা খবরের কাগজ সামলাতে হয়না। তাই তাঁবেদারি করতেও হয়না। ভগবানকেও ভয় পেতে হয়না। মেজদার বোনও কি এই রাজ্যের অরাজকতার পেছনে যে ষড়যন্ত্র হচ্ছে তার অংশীদার? তাঁর রাবড়ি প্রসেসের গোরুর রচনা পড়ে সেদিনই আমার সন্দেহ হয়েছিল। তাই ঠিক সেইদিন আমি একটি ব্লগ লিখেছিলাম এই বিষয়ে। সন্দেহ ঘনীভূত হচ্ছে। মেজদার বোন মিটিমিটি হাসছেন। আর ভাবছেন, তাঁর মেজদা বেঁচে থাকলে দেখে বেশ তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করতেন রাজ্যের অরাজকতা। এইটাই তো ষড়যন্ত্রীদের কাছে একান্ত কাম্য ছিল।

মেজদার হীনমনা বীরাঙ্গনা সেদিন হাবে ভাবে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, মমতাই ঠিক। মমতাকে অপদস্থ করতে বিরোধীরা চক্রান্ত করে বিভিন্ন রকম অঘটন ঘটিয়ে চলেছে। ‘সব মিলিয়ে নৈরাজ্যের বাতাবরণ যেন হঠাৎই চাগাড় দিয়েছে’ উক্তিটির পেছনে তিনি সরাসরি বিরোধীদের ইঙ্গিত করেছিলেন। যেন বিরোধীরাই নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে সাহায্য করছে। তিনি তাঁর পরমপূজ্যা দিদির স্তাবকতা করতে গিয়ে সঠিক-বেঠিকের হিসেব গুলিয়ে ফেলেছেন। ঠিক যেমন রাবড়িতে খানিকটা কাঠকয়লার ছাই পড়লে তাও গুলিয়ে যায় রাবড়ির সঙ্গে। দুর্গাপুরের একটি ছাপাখানার ঠিকা কর্মীরা এক তরুণীকে ধর্ষণ করার পর মেজদার বোন তাঁর রাবড়ির মধ্যে একটু ছাই মিশিয়ে দিয়ে হেডলাইন করে লিখে দিলেন ওই ধর্ষকরা গণশক্তির কর্মী। রাবড়িটা দারুণ জমে উঠল।

মেজদার বোনের সংবাদপত্রটি অন্ধ বামবিরোধী। এই হীনমনা বীরাঙ্গনার নির্ভেজাল মমতাপন্থী সংবাদপত্রটি পাঠকদের অন্ধ হয়ে থাকতে সাহায্য করছে। সংবাদপত্রের কৌলীন্য রাখতে পক্ষ এবং ‘কুপক্ষ’ অর্থাৎ দুই পক্ষেরই সংবাদ পরিবেশন করা উচিত। এবং পাঠকের মননে বিভিন্ন বিষয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসার চাহিদা বাড়ানো উচিত। তা না করে মেজদার বোন নিজেই সংবাদপত্রের অফিসে কাজকর্ম ছেড়ে রাবড়ি তৈরি করতে বসে পড়েছেন। পাড়াগাঁয়ের ক্ষেন্তিপিসির মতো কূটকাচালি করে চলেছেন। গণতন্ত্রটাকেই ভেবে নিয়েছেন রাবড়ির হাঁড়ি। আর তাতে চারদিক দিয়ে হাওয়া দিয়ে চলেছেন। কয়েকদিন আগে পর্যন্ত ধারাবাহিক ভাবে বাম আমলে স্বাস্থ্য দফতরের দুর্নীতি নিয়ে লেখাচর্চা করে পাঠকদের বিভ্রান্ত করতে চেষ্টা করেছেন। এই ব্যাপক 'দুর্নীতি' ভূভারতে অন্য কোন খবরের কাগজ তেমন ভাবে পাত্তাই দিলনা। সীমাবিহীন স্তাবকতা করে সংবাদপত্রকে জীবিত রাখা দুষ্কর।

কতজন লোককে মেজদার বীরাঙ্গনা বোনটি দেখতে পান আমি জানিনা। তিনি তো রাবড়ি তৈরি করতে ব্যস্ত থাকেন। কয়লার ধোঁয়ায় চোখ জ্বলে যায়। চোখ কচলে আবার তাঁকে রাবড়ি তৈরি করতে বসতে হয়। নয়তো ঢাকের দায়ে মনসা বিক্রি হয়ে যেতে পারে। তিনি লিখছেন, বহু লোক মনে করছেন, মমতা ও তাঁর গুণধর প্রশাসনের ব্যাপারে একই সঙ্গে মেজদার বিখ্যাত ‘রাবড়ি প্রসেস’এর ফর্মুলা সিপিএম কাজে লাগিয়ে চলেছে। অর্থাৎ তলে তলে আগুন জ্বাললেও সেই আগুন ওপর থেকে ঠান্ডা করার ভান করছে। অর্থাৎ সিপিএম ষড়যন্ত্রী। 

স্তাবক হলে ক্ষতি নেই। বন্ধু হলেও ক্ষতি নেই। তাঁবেদারি করলেও কোন আপত্তি নেই। আবার ভগবানকে ভয় করা বা না করলেও কিছু যায় আসে না। তবে মারাত্মক অরাজকতা তৈরি হয় যখন কোন সংবাদপত্র অপশাসকের বন্ধু হয়ে যায়। যখন কোন সংবাদপত্রের মুনিব অপশাসকের তাঁবেদারি করে। যখন কোন সংবাদপত্রের সম্পাদক স্বৈরাচারী শাসকের পায়ের তলা চেটে পরিস্কার করে দেয় এবং সেই কথা ফলাও করে লিখে পাঠকের কাছে পরিবেশন করে। অর্থাৎ রাবড়ি পরিবেশন করে। ঠাকুর ঘরে কে রে? আমি আগেও কলা খাইনি। আমি এখনো কলা খাচ্ছিনা।